Duration 7:17

Madhyamik history suggestion 2021. chapter 7 & 8th ( marks-4 )

156 watched
0
6
Published 2 Aug 2020

দলিত বিষয় নিয়ে গান্ধীজি-আম্বেদকর এর বিতর্ক আলোচনা করার পূর্বে দলিতকারা তা জানা প্রয়োজন।ভারতীয় সমাজে অতি প্রাচীনকাল থেকেই বর্ণভেদ প্রথা ও জাতিভেদ প্রথা প্রচলিত ছিল। এই প্রথায় সর্বনিম্ন স্থানে যাদের স্থান ছিল তারা ছিল শূদ্র।চতুর্বর্ণ যুক্ত হিন্দু সমাজের বাইরে বা সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থানকারী শুদ্রদের নিচেও একটি স্তর আছে যাদের অবর্ণ বা অতিশুদ্র বলা হচ্ছে।সমাজে এরা ছিল অস্পৃশ্য। এরা সমাজের বিভিন্ন নিম্নমানের কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল।ঔপনিবেশিকভারতে সমাজের এই সুযোগ সুবিধা হীন অবহেলিত মানুষেরাই পরিচিত হয় দলিত নামে। দলিত কথাটি 1930 এর দশকে প্রথম ব্যবহৃত হয় অনেকেই আবার বর্তমান শাসনিক পরিভাষায়  তপশিলিজাতি ও তপশিলি উপজাতি ভুক্ত সকলকেই 'দলিত' বলে আখ্যায়িত করতে চান।                           ভারতের এই তথাকথিত দলিত বা অনুন্নতশ্রেণির মানুষদের বিরুদ্ধে অনাচার, বিভিন্ন মানবিক অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা বা অস্পৃশ্যতা দেশের সব মানুষ মেনে নিতে পারেনি। এর বিরুদ্ধেবারংবার প্রতিবাদ উঠেছে এবং ১৮৮০ থেকে ১৮৯০-এর মধ্যে বেশ কিছু সমাজ সংস্কারক গোষ্ঠী অস্পৃশ্যতা মোকাবিলায়। কার্যকরীপদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে এগিয়ে এসেছে। দলিতমতাদর্শ ও অধিকার নিয়ে ভারতীয় আন্দোলনের প্রাণপুরুষ গান্ধীজী এবং দলিত আন্দোলনের সর্বশ্রেষ্ঠ সংগ্রামী নেতা ও বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ড. বি. আর. আম্বেদকরের দৃষ্টিভঙ্গীর মধ্যে কিছু পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।       ড. আম্বেদকর নিজে দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ এবং নানাভাবে অনাচারের শিকার। তিনি দলিতসম্প্রদায়কে পূর্ণ অধিকার ও মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, হিন্দুসমাজে প্রচলিত বর্ণাশ্রমপ্রথাই দলিত সমাজের ওপর সকল অনাচার ও অস্পৃশ্যতার কারণ। এই ব্যবস্থাইসমাজকে দুর্বল করে, পঙ্গু করে এবং মৃত্যু মুখেঠেলে দেয়। অপরপক্ষে, গান্ধীজীছিলেন বর্ণাশ্রম ব্যবস্থার সমর্থক এবং প্রবল অস্পৃশ্যতা বিরোধী। তার কাছেদলিতরা ছিল হরিজন’ বা ঈশ্বরের সন্তান। তিনিও দলিতসম্প্রদায়কে পূর্ণ অধিকারে প্রতিষ্ঠিত করতে সচেষ্ট ছিলেন।তার উদ্যোগেই জাতীয় কংগ্রেস প্রথম দলিত সমস্যা নিরসনে উদ্যোগী হয়। তিনি চাইতেনবর্ণাশ্রম ব্যবস্থাকে অক্ষুন্ন রেখেঅস্পৃশ্যতা দূরীকরণ ও দলিত সম্প্রদায়ের কল্যাণ। ১৯৩১ সালের১৪ আগস্ট, গান্ধী-আম্বেদকর সাক্ষাৎকালকালে ড. আম্বেদকর তাকেবলেন- “আমার বিশ্বাস, অস্পৃশ্যতা বর্ণাশ্রম ধর্মে অবশ্যম্ভাবী পরিণতি। যতদিন বর্ণাশ্রমথাকবে ততদিন হিন্দুধর্মে অস্পৃশ্যতা থাকবে। আপনি বর্ণাশ্রমচান; অথচ অস্পৃশ্য চান না, এটা একটা অবাস্তব কথা।”       অনুন্নত সম্প্রদায়কে জাতীয় আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে বিট্রিশ প্রধানমন্ত্রী র‍্যামসে ম্যাকডোনাল্ড ‘সাম্প্রদায়িকবাঁটোয়ারা '-র নীতি ঘোষণা করেন (আগস্ট, ১৯৩২ খ্রিঃ)। এর দ্বারা অনুন্নত সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচকমণ্ডলী গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এই প্রস্তাবকার্যকরী হলে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ তৈরি হত এবং অনুন্নত সম্প্রদায় বর্ণহিন্দুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত। গান্ধীজী এইনীতির তীব্র বিরোধিতা করেন এবং এর প্রতিবাদে ২০শে সেপ্টেম্বর থেকে অনশন শুরু করেন। এ সময়তফশিলি নেতা ড. আম্বেদকর তারসঙ্গে আলোচনা করেন এবং ২৫শে সেপ্টেম্বর পুণা চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এর দ্বারাহিন্দুদের ক্ষেত্রে যৌথ নির্বাচনের নীতি স্বীকৃতি হয় এবং সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারার মাধ্যমে প্রাপ্ত আসনের দ্বিগুণ আসন তফশিলি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত করা হয়।এইভাবে গান্ধী-আম্বেদকর বিতর্কের' অবসান ঘটে।

Category

Show more

Comments - 1